সন্তান মারকুটে হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কীভাবে বদলাবেন খুদের বদভ্যাস গুলো।

সন্তান মারকুটে হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কীভাবে বদলাবেন খুদের বদভ্যাস গুলো।

আপনারা যারা  "সন্তান মারকুটে হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কীভাবে বদলাবেন খুদের বদভ্যাস"  এই বিষয়ে জানতে চান। তাহলে, আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন আপনার সন্তান যদি অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক বা মারমুখী আচরণ করে, তাহলে কীভাবে সহজ কিছু উপায়ে তার এই বদভ্যাস বদলে ফেলা যায় এবং পিতামাতাদের জন্য কার্যকরী গাইড লাইন সম্পর্কে।

চলুন এই আর্টিকেলে আমরা জেনে নিই, কীভাবে বদলানো যায় শিশুর বদভ্যাস গুলো সেই সম্পর্কে।

সন্তান মারকুটে হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কীভাবে বদলাবেন খুদের বদভ্যাস গুলো।


ভূমিকাঃ সন্তান মারকুটে হয়ে যাচ্ছে? জেনে নিন কীভাবে বদলাবেন খুদের বদভ্যাস গুলো।

সন্তান যদি হঠাৎ করেই মারকুটে বা অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক আচরণ করতে শুরু করে, তাহলে সেটা অনেক পিতামাতার জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই ধরনের আচরণ শুধু ঘরেই নয়, স্কুল বা খেলার মাঠেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ শিশুর এই আচরণ পরিবর্তনযোগ্য, যদি আপনি সঠিকভাবে বুঝতে পারেন এর পেছনের কারণগুলো এবং প্রয়োগ করতে পারেন কিছু সহজ প্যারেন্টিং কৌশল।

আরো পড়ুনঃ শিশুকে শাস্তি নয় বরং ১০টি কৌশলে তাকে শৃঙ্খল হতে শেখান।


শিশু মারমুখী আচরণ কেন করে?

১. মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা:
অনেক সময় শিশুরা লক্ষ্য করে, মারামারি করলে বাবা-মা বা আশেপাশের মানুষ তার দিকে বেশি মনোযোগ দেয়।

২. অপ্রকাশিত আবেগ:
শিশুরা হয়তো তাদের রাগ, হতাশা বা মন খারাপের কথা ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না। তখন তারা আঘাত বা চিৎকারের মাধ্যমে সেই আবেগ প্রকাশ করে।

৩. পরিবেশগত প্রভাব:
শিশু যদি ঘরে বা টিভি/ইন্টারনেটে সহিংসতা দেখে, সেটা তার আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে।

৪. বয়সজনিত কারণ:
২-৫ বছর বয়সী শিশুরা অনেক সময় ‘নো’ বলার ধাপ পার করছে। তখন তারা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য আক্রমণাত্মক আচরণ করতে পারে।


কীভাবে বদলাবেন সন্তানের এই বদভ্যাস?

১. শান্ত থাকুন এবং ধৈর্য ধরুন

আপনার প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি রেগে যান বা মারধর করেন, তাহলে শিশুটি শিখে যাবে যে রাগের প্রকাশও মারপিটের মাধ্যমে করা যায়। তাই প্রথমেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

২. আচরণ বুঝে ব্যবস্থা নিন

শিশু কেন মারছে, তা বোঝার চেষ্টা করুন। সে কি ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত, না কি মনোযোগ পেতে চাইছে? মূল কারণটা ধরতে পারলে সমাধান করাও সহজ হবে।

৩. ‘না’ বলার বিকল্প দিন

শুধু ‘মারবে না’ বললেই হবে না। তাকে শেখাতে হবে কী করা উচিত। যেমন, “রাগ লাগলে বলো ‘আমি রেগে গেছি’, কিন্তু কাউকে মারবে না।”

৪. ভালো আচরণের প্রশংসা করুন

যখনই সন্তান শান্তভাবে সমস্যার সমাধান করে, তাকে প্রশংসা করুন। এতে শিশুর ইতিবাচক আচরণ বাড়বে।

৫. সময় দিন এবং মনোযোগ দিন

প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় শিশুর সঙ্গে খেলার বা গল্প করার চেষ্টা করুন। এতে সে বুঝবে যে ভালোভাবে আচরণ করলেও সে মনোযোগ পায়।

৬. স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করুন

টিভি বা মোবাইলে শিশুরা যদি সহিংসতা দেখে, তাহলে সেটার প্রভাব সরাসরি আচরণে পড়ে। বয়স অনুযায়ী কনটেন্ট নির্বাচন করুন এবং সময় বেঁধে দিন।

৭. সামাজিক দক্ষতা শেখান

শিশুকে ‘সরি’, ‘প্লিজ’, ‘ধন্যবাদ’, ‘আমার খারাপ লেগেছে’ — এমন শব্দ ব্যবহার শেখান। এতে সে ধীরে ধীরে ভদ্র আচরণ শিখবে।


কখন চিকিৎসকের সাহায্য নেবেন?

যদি দেখেন, সন্তান নিয়মিত সহিংসতা করছে, কথা শোনে না, অন্য শিশুদের ক্ষতি করছে বা কোনো কারণে নিজেকে আঘাত করছে, তাহলে চাইল্ড সাইকোলজিস্ট বা বেবি কাউন্সেলরের পরামর্শ নিতে হবে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া ভবিষ্যতের জন্য ভালো।


আরো পড়ুনঃ শিশুদের ৬টি বাস্তব অভ্যাস যা তাদের কঠিন কাজ উপভোগ করতে সাহায্য করে।

উপসংহারঃ 

প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন শিশুদের আচরণ একদিনে গড়ে ওঠে না, তেমনি একদিনে বদলেও না। ধৈর্য, ভালোবাসা ও সচেতন প্যারেন্টিংয়ের মাধ্যমেই শিশুর মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মনে রাখবেন, আপনার সন্তানের প্রথম শিক্ষক আপনি-আপনার আচরণই তার জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা।

যাই হোক যদি কোন মন্তব্য থেকে থাকে তবে কমেন্ট করে জানাবেন এবং আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ


Post a Comment

0 Comments