হার্ট অ্যাটাকের ৬টি লক্ষণ এবং তা হলে সঙ্গে সঙ্গে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

হার্ট অ্যাটাকের ৬টি লক্ষণ এবং তা হলে সঙ্গে সঙ্গে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।

হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack) বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (Myocardial Infarction) একটি মারাত্মক শারীরিক অবস্থা, যা হৃদযন্ত্রে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে ঘটে। এটি সময়মতো চিকিৎসা না করালে প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই, হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জানা এবং জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

হার্ট অ্যাটাকের ৬টি লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাকের ৬টি প্রধান লক্ষণঃ

১। বুকে তীব্র ব্যথা বা চাপ অনুভব করাঃ

বুকে এক ধরনের ভারী চাপ, ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হয়, যা সাধারণত বুকের মাঝখানে বা বাম দিকে অনুভূত হয়। এটি কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে অথবা মাঝে মাঝে কমে আবার বাড়তে পারে।

২। শ্বাসকষ্ট (Shortness of Breath)

হার্ট অ্যাটাকের সময় অনেকেরই শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এটি ব্যথার সঙ্গে বা ব্যথা ছাড়াও হতে পারে।

৩। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা ছড়িয়ে পড়াঃ

বুকের ব্যথা ছাড়াও ব্যথা কাঁধ, হাত (বিশেষত বাঁ হাত), ঘাড়, চোয়াল বা পিঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

৪। মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাবঃ

হঠাৎ মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা বমি বমি ভাব হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে।

৫। ঠান্ডা ঘাম হওয়াঃ

অনেক সময় শরীর ঠান্ডা হয়ে প্রচুর ঘাম হতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম সতর্কবার্তা।

৬। অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব করাঃ

বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের সময় তীব্র ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে, এমনকি সামান্য কাজ করলেও।


হার্ট অ্যাটাক হলে সঙ্গে সঙ্গে যা করবেনঃ

হার্ট অ্যাটাকের সময় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জীবন বাঁচাতে পারে।

১। দ্রুত জরুরি সাহায্য নিন (999 / 112 নম্বরে কল করুন)

যদি মনে হয় হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে, তাহলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন বা হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।

২। বসে পড়ুন এবং শান্ত থাকার চেষ্টা করুনঃ

দ্রুত নড়াচড়া না করে একটি স্থানে বসুন এবং শ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন।

৩। অ্যাসপিরিন (Aspirin) খেতে পারেনঃ

একটি ৩০০ মিগ্রা অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খেলে রক্ত জমাট বাঁধার হার কমতে পারে। তবে এটি কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে করা উচিত।

৪। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করুনঃ

গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন এবং দুশ্চিন্তা কমানোর চেষ্টা করুন।

৫। নিট্রোগ্লিসারিন (যদি প্রেসক্রিপশন থাকে) ব্যবহার করুনঃ

যদি ডাক্তার নিট্রোগ্লিসারিন প্রেসক্রাইব করে থাকেন, তাহলে তা ব্যবহার করুন। এটি রক্তচাপ কমিয়ে হার্টের চাপ কমাতে সাহায্য করে।

৬। কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (CPR) প্রয়োগ করুন (যদি রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়)

যদি আক্রান্ত ব্যক্তি জ্ঞান হারায় এবং শ্বাস নিচ্ছে না, তাহলে বুকের মাঝখানে দুই হাত রেখে দ্রুত চাপ দিতে থাকুন (প্রতি মিনিটে ১০০-১২০ বার প্রেস করুন) এবং অ্যাম্বুলেন্স আসার অপেক্ষা করুন।


হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের উপায়ঃ

✔ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো
✔ সুষম খাদ্য গ্রহণ করা (কম চর্বিযুক্ত ও কম লবণযুক্ত খাবার)
✔ ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করা
✔ নিয়মিত ব্যায়াম করা
✔ মানসিক চাপ কমানো
✔ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

হার্ট অ্যাটাক একটি জীবনঘাতী পরিস্থিতি হলেও দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নিলে জীবন রক্ষা করা সম্ভব। যদি উপরের লক্ষণগুলোর কোনো একটি বা একাধিক অনুভব করেন, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

আপনার সুস্থতা আমাদের কাম্য!

Post a Comment

0 Comments