মুখে বয়সের ছাপ স্পষ্ট হওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ ! এই দুই বিষয়ে জোর দিন আজই!
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মুখে বয়সের ছাপ স্পষ্ট হয়। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যত্ন নিলে আপনি বয়সের ছাপকে দেরিতে আনতে পারেন। জেনে নিন কী কী।
মুখে বয়সের ছাপ কেন পড়ে?
বয়স বাড়ার প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় আমাদের ত্বক তার লাবণ্য ও স্থিতিস্থাপকতা হারাতে থাকে। কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামক প্রোটিনের মাত্রা কমে গিয়ে ত্বক শুষ্ক, নিস্তেজ ও কুঁচকে যেতে শুরু করে। এর ফলে মুখে রিংকেলস (ভাঁজ), ফাইন লাইন এবং দাগ দেখা যায়। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, মুখে বয়সের ছাপ পড়ার আগেই যদি নির্দিষ্ট দুটি বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া যায়, তাহলে এ প্রক্রিয়া অনেকটাই ধীর করা সম্ভব।
চিকিৎসকদের পরামর্শঃ
বয়সের ছাপ রোধে এই দুই বিষয়ে জোর দিন।
১। সঠিক পুষ্টি ও হাইড্রেশনঃ
চিকিৎসকদের মতে, বয়স ধরে রাখতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে আপনার খাদ্যাভ্যাস।
- পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন: শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম ইত্যাদি ত্বকের কোষগুলিকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার যেমন: মাছ, চিয়া সিডস, ফ্ল্যাক্স সিডস ত্বককে ময়শ্চারাইজড রাখে এবং ফাইন লাইন কমাতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন C, E, এবং A যুক্ত খাবার কোলাজেন উৎপাদনে সহায়ক যা ত্বককে দৃঢ় এবং উজ্জ্বল রাখে।
- পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক ভেতর থেকে হাইড্রেট থাকে, ফলে এটি আরও টানটান ও প্রাণবন্ত দেখায়।
২। ত্বকের নিয়মিত পরিচর্যা ও সান প্রোটেকশন
ত্বক যত্ন ছাড়া বয়স ধরে রাখা কঠিন। তাই চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন:
- প্রতিদিন সকালে ও রাতে ত্বক ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং (CTM) করুন।
- সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন SPF 30 বা তার বেশি। সূর্যের UV রশ্মি ত্বকের কোলাজেন নষ্ট করে ও রিঙ্কেলসের কারণ হয়।
- সপ্তাহে ১-২ বার এক্সফোলিয়েশন করুন, যাতে মৃত কোষ দূর হয় ও নতুন কোষ গঠিত হয়।
- প্রয়োজন অনুযায়ী রেটিনল, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বা ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী।
অতিরিক্ত কিছু কার্যকরী টিপসঃ
- ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিন (৭-৮ ঘণ্টা)।
- মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন – ধ্যান, ব্যায়াম বা হবি কাজে লাগাতে পারেন।
- হঠাৎ ওজন কমানো বা বাড়ানো থেকেও বিরত থাকুন, এতে ত্বক কুঁচকে যেতে পারে।
উপসংহারঃ
মুখে বয়সের ছাপ পড়া অনিবার্য হলেও, একটু যত্ন নিলে তা অনেকটাই দেরি করা যায়। চিকিৎসকরা যে দুটি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তা হলো – সঠিক পুষ্টি গ্রহণ এবং ত্বকের নিয়মিত পরিচর্যা। এই দুটি অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলেই আপনি দীর্ঘদিন ধরে তারুণ্যদীপ্ত ত্বক ধরে রাখতে পারবেন।
সচরাচর জিজ্ঞাসাঃ
প্রশ্ন: বয়সের ছাপ কত বছর বয়স থেকে দেখা যায়?
উত্তর: সাধারণত ৩০ বছরের পর থেকেই সূক্ষ্ম রেখা দেখা দিতে শুরু করে। তবে লাইফস্টাইল ও জিনগত কারণে এটা আগে বা পরে হতে পারে।
প্রশ্ন: শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপায়েই কি বয়সের ছাপ রোধ করা সম্ভব?
উত্তর: হ্যাঁ, নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার ও ত্বকের যত্ন নিয়ে অনেকটা রোধ করা যায়, তবে প্রয়োজনে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেয়া ভালো।
এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
0 Comments